বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

ধর্মপাশায় গোমাই নদীর তীরে সর্বনাশা অবৈধ ইট ভাটা

amarsurma.com
অবশেষে গ্রেফতার দাদন ব্যবসায়ি হবু

প্রতিনিধি (সুনামগঞ্জ):
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ফসলি জমি নষ্ট করে ও একটি বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে  বিএমএস নামে একটি অবৈধ ইটের ভাটা গড়ে উঠেছে।
আর ওই অবৈধ ইট ভাটার মালিক হলেন স্থানীয় আতিকুর রহমান ফারুকী ও তার বড় ভাই মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক  মাহবুব ফারুকী। ওই দুই ভাই এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।
উপজেলার মধ্যনগর-ধর্মপাশা সড়ক সংলগ্ন গোমাই নদীর তীরে ২০১৯ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই ফসলি জমি নষ্ট করে ওই অবৈধ ইট ভাটাটি স্থাপন করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এতে করে ওই অবৈধ ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া প্রভাবে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে হাওরের ফসলি জমি ও  বিপর্যস্ত হচ্ছে প্রকৃতিক পরিবেশ।
জেলা প্রশাসকের ওয়েব পোর্টাল সুত্রে জানা গেছে, ধর্মপাশা উপজেলায় মুর্শেদ ব্রিকস নামে একটি বৈধ ইটের ভাটা রয়েছে। কিন্তু উপজেলার চাতলা হাওরের ফসলী জমি নষ্ট করে বিএমএস নামে রাতারাতি অবৈধভাবে গড়ে উঠা ওই ইট ভাটাটির নাম ওয়েব পোর্টালে পাওয়া যায় নি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের চাতলার হাওরের প্রায় ৫-৬ একর ফসলী জমি নষ্ট করে বিএমএস নামক ওই অবৈধ ইটের ভাটাটি ২০১৯ সালে গড়ে তোলেন মধ্যনগর ইউনিয়নের ফারুকনগর গ্রামের বাসিন্দা ও মধ্যনগর বাজারের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, দৈনিক আজকের পত্রিকার নব্য সাংবাদিক আতিকুর রহমান ফারুকী ও তার বড় ভাই মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মাহবুব ফারুকী। অবৈধভাবে গড়ে উঠা ওই ইট ভাটির উওর পাশে রয়েছে ধর্মপাশা-মধ্যনগর সড়ক ও গলইখালী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়। দক্ষিণ পাশে রয়েছে বিশাল চাতলার হাওর ও শেখ হাসিনা আশ্রয়ন প্রকল্প। আর পূর্ব পাশেও ফসলি জমি ও পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে গোমাই নদী।
গলইখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপুতী তালুকদার জানান, ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে ৯৮ জন শিক্ষার্থী পাঠদান করছে। ইট ভাটাটি স্কুল সংলগ্ন হওয়ায় ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এবং স্থানীয় বসবাসকারীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সর্দি-কাশি আর শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রাত হয়ে থাকে। তাই ইট ভাটাটি বন্ধ করা খুবই জরুরী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অবৈধ ইট ভাটার মালিক সাংবাদিক আতিক ফারুকী ও তার বড় ভাই মাহবুব ফারুকী তারা  মূলত রাজাকার পরিবারের সন্তান। তারা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। আমি তাদের ওই অবৈধ ইট ভাটাটি এখান থেকে উচ্ছেদ করে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ধবংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
মেসার্স বিএমএস ব্রিকসের মালিক ও মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মো. মাহবুব ফারুকীর ব্যবহৃত ০১৭১২-৫৯৩০৪০ নাম্বার মোবাইল ফোনে ও তার ছোট ভাই আতিকুর রহমান ফারুকীর ব্যবহৃত ০১৭১২-৩৫৬৮১৪ নম্বর পৃথক দুটি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা ফোন না ধরায় তাঁদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, ওই ইটভাটার লাইসেন্স নবায়ন করাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র যদি না থাকে তা হলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলে ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক  মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জেলার সবকটি ইটভাটাকে লাইসেন্স নবায়ন করাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে ব্যর্থ হবেন, তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com